প্রকাশিত: Mon, Mar 20, 2023 4:36 PM
আপডেট: Sat, Jun 21, 2025 10:43 PM

আরাভ দুবাই থেকেও পালাতে পারেন, বেশ কয়েকজন সহযোগী নজরদারিতে

মাসুদ আলম, শহীদুল ইসলাম: বহুল আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে হৃদয়কে নিয়ে যেন ধুম্রজালের শেষ নেই। তাকে নিয়ে বের হয়ে আসছে নিত্য নতুন সব তথ্য। ৮টি নামে অন্তত ৫ টি দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেছে তিনি। ফেরিয়ওয়ালার ঘরে জন্ম নেয়া আরাভ বাংলাদেশ থেকে ভারত, ভারত থেকে দুবাই পালিয়ে যান। কখনো আমেরিকা, কখনো কানাডা বা রাশিয়া, কোথায় নেই তার ব্যবসায়ী সাম্রাজ্য! যে আরাভ একসময় ঠিকমতো তিনবেলা খেতে পারতেন না, গত কয়েক বছরে নারীপাচার ও স্বর্ণচোরাচালানের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান আরাভ খান। ইন্টারপোল রেড নোটিশ গ্রহণের খবরে দুবাই থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন আরাভ।

ডিবি জানায়, আরাভের পেছনে কারা তাদেরও খোঁজে বের করা হবে। আরাভ খানের অপরাধজগতে শিল্পীদেরও যোগসাজশ পাচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সাত শিল্পীর যোগসাজশে খুঁজতে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দারা। 

সোমবার আইজপি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আরাভ খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রেড নোটিশ গ্রহণ করেছে ইন্টারপোল। তারা অভিযোগটি খতিয়ে দেখছেন এবং তাকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোল সকল প্রকার সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে আরাভের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তার সম্পর্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ পুলিশ। 

এদিকে পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলাসহ আরাভ খান ১২ টি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি। তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও গত বছর ও চলতি বছর দেশে এসে ঘুরে গেছেন তিনি। দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট তাকে ভিসা দিয়েছে। বিমানবন্দরে তার ইমিগ্রেশন পার হাওয়া নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এছাড়া তার আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরাভ খানের সঙ্গে প্রভাবশালী মহলের সখ্য থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আরাভের বাবা মতিউর মোল্লাহ একসময় বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়িপাতিল বিক্রি করতেন। আরাভ খান তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামে এসে তার পুরো পরিবারকে দুবাই নিয়ে গেছেন। এলাকায় শুধু একটি ঘর আর সামান্য জমি রয়েছে। আরাভ ছোটবেলায় বাগেরহাটের চিতলমারিতে থাকতেন। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। দারিদ্র্যের কারণে এরপরে আর তার লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারী থেকে ২০০৮ সালে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় এসে নিকেতন থাকতেন। নিয়মিত মিডিয়া পাড়ায় যাতায়াত ছিলো তার। এরপর ঢাকা থেকে চলে যান কলকাতায়। কলকাতা ২ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি বাসায় থাকতেন। ওই বাড়ির মালিককে আরাভ বাবা পরিচয় দিয়ে পাসপোর্ট করে দুবাই যান।  আরাভের একটি ছেলে সন্তান আছে। সে দাদা-দাদির সঙ্গেই থাকত। তাকেও দুবাই নিয়ে গেছেন আরাভ। পুলিশের খাতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব